ইন্টারনেট গতিতে নতুন বিশ্ব রেকর্ড
সভ্যতার যুগে তথ্য-উপাত্ত দ্রুত গতিতে সরবরাহ ও গ্রহণের নিশ্চয়তা প্রদানের লক্ষে ইন্টারনেট সেবার বিকল্প নেই। যুগ যতই আধুনিক হচ্ছে, আমরা প্রতিনিয়তই ইন্টারনেট সেবার প্রতি ঝুঁকে পড়ছি। তার চাইতে খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে দ্রুত গতির ইন্টারনেট। তাই, আমরা আজকের এই কন্টেন্টটির মাধ্যমে ইন্টারনেট গতিতে নতুন বিশ্ব রেকর্ড সম্পর্কে আপনাদেরকে কিছুটা হলেও ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব।
বর্তমান বিশ্বে ইন্টারনেট জগতে ব্রডব্যান্ড এর বিকল্প নেই। এক গবেষণায় উঠে এসেছে, ইন্টারনেট গতিতে নতুন বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে ৪৫ লাখ গুণ উচ্চ গতির ইন্টারনেট। অ্যাস্টন ইউনিভার্সিটি অফ বার্মিংহাম-এর একদল খ্যাতিমান বিজ্ঞানীদের গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করে সেকেন্ডে ৩০১ টেরাবিট অর্থাৎ নয় হাজার এইচডি মুভির সমতুল্য ডেটা প্রেরণের লক্ষ্য অর্জন হয়। যার কারণে নতুন এই উচ্চ গতির ইন্টটারনেট সেবার মাধ্যমে একটি মুভি ডাউনলোড করতে সময় লাগবে কেবলমাত্র এক মিনিট। উচ্চ গতির এই ইন্টারনেট প্রযুক্তির মুল ভূমিকায় অর্থাৎ প্রধান অন্তরায় হিসেবে পরিগণিত হয় আধুনিক প্রযুক্তির অপটিক্যাল প্রসেসিং ডিভাইস তৈরির মাধ্যম। এই অপটিক্যাল প্রসেসিং ডিভাইস তৈরির মাধ্যম হিসেবে এমন কিছু তরঙ্গ ও দৈর্ঘ্যের ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হয়েছে যা ইতোপূর্বে কখনও অপটিক্যাল ফাইবার সিস্টেমে ব্যবহৃত হয় নাই।
আরও পড়ুনঃ হ্যাকার থেকে মোবাইল ফোন রক্ষার টিপস
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘অফকম’-এর প্রতিবেদনে জানা যায়, বিগত বছরে দেশটিতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর গড়আনুপাতিক হারে গতি সেকেন্ডে ৬৯.৮ মেগাবিট পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে। যার ফলে ঐ দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করে।
অন্যদিকে জাপানের মতো উন্নত দেশও ইন্টারনেট পরিসেবায় সর্বোচ্চ গতির ইন্টারনেট সেবা নিস্তিতের নতুন বিশ্ব রেকর্ড অর্জন করেছে। ইতোপূর্বে জাপানে ইন্টারনেট পরিসেবায় সর্বোচ্চ গতির রেকর্ড ছিল ১৭৮ টেরাবিট পার সেকেন্ড। সে দেশের সুনামধন্য প্রকৌশলীদের দাবি এই যে, ডেটা আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে ১ সেকেন্ডে ৩১৯ টেরাবিট গতিতে ডেটা স্থানান্তর করতে সক্ষম।
আরও পড়ুনঃ খালি চোখে রাত্রিতে দেখা মিলল শনি গ্রহ !
উচ্চ গতির ইন্টারনেটের সকল রেকর্ড অর্জনে বছর না যেতেই নতুন আরও একটি বিশ্ব রেকর্ড অর্জনের সুখবর পেল প্রযুক্তি প্রেমীরা। এ বছর জুন নাগাদ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ফাইবার অপটিক কমিউনিকেশন-এর এক গবেষণা প্রতিবেদনে নতুন বিশ্ব রেকর্ডের বিষয়টি প্রকাশ পায়। গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে আসে প্রায় ৩ হাজার কিঃ মি. এর চাইতে বেশি দীর্ঘায়িত এক ফাইবার অপটিক্যাল কেবলে এই রেকর্ডটি নিশ্চিত করেছেন কিছু সুনামধন্য প্রযুক্তি গবেষক। বর্তমান প্রচলিত ফাইবার অপটিক্যাল কেবলের ক্ষেত্রেও এটির ব্যবহার বহুলাঙ্কশে উপযুগী। গবেষকরা এটিকে প্রয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ফাইবার অপটিক্যাল কাঠামোকে উন্নত প্রযুক্তির সাথে মিলিয়ে ব্যবহার করেছিলেন। গতানুগতিক মানের কোরের বিনিময়ে গবেষকরা এমন চারটি কোর ব্যবহার করেছিলেন যা গ্লাস টিউবের তৈরি। ডেটা পাঠানোর লক্ষ্যে উক্ত চার কোরকে ফাইবারে স্থাপন করে নিয়েছিলেন গবেষক দল। উক্ত কাজটি করতে ওয়েভলেংথ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং নামের এক কৌশল ব্যবহার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সিগনালকে বিভিন্ন ওয়েভলেংথে ভাগ করে নেওয়া হয়েছিল এবং তা একই সময়ে সম্প্রচার করেছিল। এছাড়া, বাড়তি ডেটা বহনের ক্ষেত্রে তৃতীয় ব্যান্ডও ব্যবহার করেছিলেন গবেষকরা। পূর্বের সকল রেকর্ডকে পিছনে ফেলে দ্বিগুণ গতিতে দেখা গেছে মার্কিনীদের এই সফল ডেটা স্পিডকে। সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে পরিমান ডেটা স্পিডের প্রয়োজন হয়, মহাকাশ গবেষণায় তার চাইতে বহুল পরিমাণে উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিসেবার প্রয়োজন পড়ে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তথ্য মতে জানা যায়, সঠিকভাবে তথ্য প্রবাহ নিশ্চিতের লক্ষ্যে নাসা বর্তমানে সেকেন্ডে ৪০০ গিগাবিট উচ্চ গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। বর্তমানে সকল রেকর্ডকে পেছনে ফেলে এটিই সর্বোচ্চ স্পিড।
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে ইন্টারনেট গতিতে নতুন বিশ্ব রেকর্ড সম্পর্কে বিশদ ধারণা পেলাম। আজকের এই আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।
comment url