OrdinaryITPostAd

অকালে চুল পাকার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন!!!

অকালে চুল পক্কতা এখন একটি মারাত্মক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। অল্প বয়সে চুল পেকে যাওয়ার দরুন আমাদেরকে লোক চোখে অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। আবার কেউবা ধরেই নেন, নিশ্চয়ই কোনো বড় রোগ হয়েছে। যার কারণে নিজেকে হতাশ হয়ে পড়তে হয়। প্রিয় পাঠক, তাই আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে অল্প বয়সে অকালে চুল পাকার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
অকালে চুল পাকা এখন একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। ছবি: সংগৃহীত প্রতিকী ছবি

অকালে চুল পাকার কারণ সম্পর্কে সূচিপত্র থেকে জেনে নিনঃ-

বয়স বাড়ার সাথে সাথে পাকবে চুল, শরীরের ত্বকে দেখা দিবে বলিরেখা। কিন্তু বয়স বৃদ্ধির আগেই এমন অনেকেই রয়েছেন যাদের অকালেই চুল পাকতে শুরু করে। এমনটি কখনোই কারও কাম্য নয়। এক্ষেত্রে কিছু প্রয়োজনীয় টিপস জেনে রাখলে আপনি অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে পারেন। নিম্নে অকালে চুল পাকা পাকার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

# অকালে চুল পাকার কারণঃ

ভিটামিনের অভাব
সাধারণত ভিটামিন বি-১২, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ও ফোলেট এর অভাবে অকালে চুল পাকতে শুরু করে। আবার চুল পড়ার কারণ হিসেবে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি এর অভাবও দায়ী। ভিটামিন সি-এর অভাবে চুল দুর্বল ও সাদা হতে শুরু করে, এরপর ধীরে ধীরে চুল পড়তে শুরু করে। সুতরাং রক্তে ভিটামিন ও মিনারেল এর অভাবে অনেকের চুল অকালেই পাকতে শুরু করে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করা হলে অকালে টাক পড়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়। ভিটামিন সি জাতীয় খাবারে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা চুল ও ত্বকের পুষ্টি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি নিয়মিত ভিটামিন সি জাতীয় খাবার যেমন-কমলা, টমেটো, আমলকী ও সবুজ শাকসবজি খেতে পারেন।

বংশীয় কারণে
বংশীয়ভাবে রক্তের সম্পর্কের কারো যদি চুল অকালেই পেকে যাওয়ার ইতিহাস থাকে তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে চুল অকালেই পাকার সম্ভাবনা রয়ে যায়।

হরমোনের সমস্যা 
হরমোন রক্তের খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। হাইপোথাইরয়ডিজম, হাইপার থাইরয়ডিজম নামক একপ্রকার হরমোনের অসুখের কারণে চুল অকালেই পেকে যেতে পারে। মানব দেহের গলায় থাইরয়েড নামক এক ধরণের গ্রন্থি রয়েছে। এই গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসৃত হয়। থাইরয়েড গ্রন্থি সঠিকভাবে হরমোন নিঃসৃত করতে না পারলে উল্লেখিত দুই ধরণের অসুখ হয়ে থাকে। আবার এই দুই ধরণের হরমোনের সমস্যার জন্য চুল অকালেই সাদা হয়ে যেতে পারে।

মানসিক অবসাদের কারণ 
অতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তা থেকেও অকালে চুল পাকতে পারে। আমাদের শরীরের তারুণ্য ধরে রাখতে সোরোটোনিন হরমোন একান্ত জরুরী। মানসিক অবসাদ ও দুঃশ্চিন্তা রক্তে সেরোটোনিন হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। যার দরুন মানব দেহের ত্বক ও চুলের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। সেরোটোনিন হরমোন মানসিক উৎকর্ষতার জন্য কাজ করে থাকে। অর্থাৎ আমরা আমাদের মনকে ভালো ও সতেজ রাখতে পারলে এ থেকে খুবই উপকার পাওয়া যায়।

চুলে অতিমাত্রায় প্রসাধনী ব্যবহার
চুলে ব্যবহারের জন্য বাজারে বিভিন্ন প্রকার প্রসাধনী পাওয়া যায়। আপনার চুলে অতিমাত্রায় প্রসাধনী ব্যবহার করলেও চুল অকালে পেকে যেতে পারে। তাই সব ধরনের প্রসাধনী সব বয়সীদের জন্য উপযোগী নয়। চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অপরিমিত প্রসাধনী ব্যবহারেও আপনার চুল অকালে পেকে যেতে  পারে।

অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড গ্রহণ 
খাদ্য তালিকায় উচ্চমাত্রায় প্রোটিন, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড গ্রহণ এবং বয়স অনুপাতে দীর্ঘদিন যাবত ওজন বেড়ে থাকলেও মাথার চুল অকালেই পেকে যেতে পারে। ভেজাল খাবার, পরিবেশদূষণের জন্যও চুল পাকতে পারে।

অটো হিউম্যান রোগ
কিছু অটো হিউম্যান রোগ রয়েছে যার কারণে চুল অকালেই পেকে যেতে পারে।

# প্রতিকারঃ

  • প্রাত্যহিক জীবনে আমাদেরকে নিয়মিত কাঁচা সবজি, মৌসুমী ফল খেতে হবে।  সবুজ ও হলুদ জাতীয় সবজি ও ফলের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে এ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা তারুণ্য ধরে রাখতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে।
  • ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলস্টেরল বা চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রয়োজনে ছোট্ট একটি ব্লাড টেস্টের মাধ্যমে আপনি আপনার শরীরের স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণ ঠিক আছে কিনা তা সহজেই জেনে নিতে পারেন।
  • ফাস্টফুড জাতীয় খাবার, কোমলপানীয়, মাদকদ্রব্য, ধূমপান দ্রুত বর্জন করুন।
  • সময় সুযোগ পেলে নিয়মিত ভালোভাবে চুল আঁচড়ানো উচিত। এর ফলে আপনার চুলের গোড়ায় দ্রুত পুষ্টি যাবে।
  • সময় পেলেই হাঁটার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন ১.৫ থেকে ২ লিটার পানি রক্ত পরিষ্কার রাখতে এবং শরীর থেকে রোগ জীবাণু দেহের বাহিরে বের করতে সহায়তা করবে। নিয়মিত হাঁটার দরুন আপনার দেহের অঙ্গে রক্ত সরবরাহ হবে। ফলে দেহের সকল অঙ্গ, ত্বক ও চুল ভালো থাকবে।
  • ঠান্ডা পানি চুলের জন্য ভালো। তাই নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করার অভ্যাস করুন।
  • কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপিসহ কিছু ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ায় চুলে পাক ধরে। চিকিৎকের পরামর্শ ছাড়া চুলে কখনোই প্রসাধনী ব্যবহার করবেন না। মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রসাধনী এবং মানহীন বিউটি পার্লার থেকে নিজেকে এড়িয়ে চলুন। এমনকি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রূপচর্চার জন্য কোনো ঔষধ সেবন করবেন না।
  • ধর্মীয় কাজে মনোনিবেশ, ইতিবাচক চিন্তা, শখের কাজ ও সৃজনশীল কাজ আমাদেরকে মানসিক প্রশান্তি যোগায়। মানসিক প্রশান্তি পূর্ণতা ফেলে এবং মন ভালো থাকলে চুল, ত্বক থাকবে পুষ্টিতে ভরপুর।

প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে অকালে চুল পাকার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিশদ ধারণা পেলাম। আজকের এই আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪