OrdinaryITPostAd

ঘামের লবণ দিয়ে টাইলস পরিষ্কার: বায়ো-ক্লিনিং পদ্ধতি জানুন

আপনার ঘর যতই পরিপাটি হোক না কেন ঘরের মেঝে যদি সুন্দর না হয় তবে আপনার কষ্টের সার্থকতা আসলে কোথায়? ধরুন মেঝে যদি টাইলস হয় আর সেটি যদি হয় দাগে পরিপূর্ণ তাহলে আপনার বাড়ির সৌন্দর্য নষ্ট করতে পারে। এ প্রেক্ষিতে আপনার কি করনীয়? আজকের আর্টিকেলটি হতে পারে আপনার জন্য সহজ সমাধান। 
পেজ সূচিপত্রঃ বর্তমান সময়ে বাসাবাড়িতে টাইলসের ব্যবহার সর্বক্ষেত্রেই ছড়িয়ে পরেছে। বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের টাইলসের সমারোহ এখন মার্কেটে ব্যাপকভাবে স্থান পেয়েছে। কিন্তু নিজে অনেক সখ করে আমরা বাজার থেকে সুন্দর দেখে টাইলস কিনে ঘরের দেয়াল অথবা মেঝেতে ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু অনেক সময় আমরা দেখতে পাই পছন্দের টাইলসগুলোয় দাগ পড়ে যায়। যেন অনুভব হয় অন্তরে দাগ লেগেছে। কিন্তু টাইলসের দাগ নিয়ে আপনি ভয় না করে, আপনার উচিৎ টাইলসের দাগ দূর করার সমাধান খোঁজা। প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের আর্টিকেলটির বিশ্লেষণের মাধ্যমে চলুন জেনে নেই কিভাবে ঘামের লবণ দিয়ে টাইলস পরিষ্কার করা সহজ হয়, তার বায়ো-ক্লিনিং পদ্ধতি কি সে সম্পর্কে নতুন ধারণা প্রদান করবো। আজকের আর্টিকেলটি প্রযুক্তি বিষয়ক ভাবনার নতুন উৎস হিসেবে সহায়ক হতে পারে। 

ভূমিকা

ঘাম আমাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। কেউ কম ঘামি, আবার কেউবা বেশী। প্রখর রৌদ্রে ঘরের বাহির হলে, কাজের অত্যধিক চাপ বৃদ্ধি পেলে আমাদের শরীরে লবনাক্ত ঘাম সৃষ্টি হয়। কিন্তু আপনি কি ভেবেছেন? এই ঘামের অভ্যন্তরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা দিয়ে টাইলস পরিষ্কার করা যায়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, সাম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের ঘামের মিশ্রিত লবণ একপ্রকার প্রাকৃতিক বায়ো-ক্লিনিং প্রক্রিয়া হিসেবে কাজ করে থাকে। আমরা নিজেদের গৃহস্থালিতে নানা প্রক্রিয়ায় টাইলস পরিস্কার ও যত্ন নিয়ে থাকি। তবে, ঘামের লবণ দিয়ে বায়ো-ক্লিনিং পদ্ধতিতে আপনার বাসা-বাড়ীর টাইলস পরিচর্যা করার কৌশলটি আসলেই যুগান্তকারী। প্রথমেই আমরা বিশ্লেষণে জানার চেষ্টা করবো বায়ো-ক্লিনিং কি? আসুন বিশ্লেষণে যাই।

বায়ো-ক্লিনিং কি? 

বায়ো-ক্লিনিং হচ্ছে এক প্রকার প্রাকৃতিক উৎস্য হতে প্রাপ্ত উপাদান যা ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা পরিষ্কারের কজ করতে পারি। অতীতে এক সময় এই কাজটি ভিনেগার দ্বারা, বেকিং সোডা পানি ও  লেবু হতে প্রাপ্ত রস দ্বারা অনেকেই করে থাকতেন। কিন্তু এখন বিশেষভাবে মানুষের শরীরের ঘাম হতে নিঃসৃত লবণ ব্যবহার করে এই পরিষ্কারের কাজটি নতুনত্বর উদ্ভাবনে যুক্ত হয়েছে। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এটি বারংবার ব্যবহারযোগ্য, এতে নেই কোন বিষাক্ত উপাদান এবং অল্প খরচেই এটি ব্যবহারউপযোগী।

ঘামের লবণের রাসায়নিক দিক

ঘামের লবণ ব্যবহারের পূর্বে ঘামের লবণে রাসায়নিক উপাদান কি থাকতে পারে এটি আমাদের জানা প্রয়োজন। ঘামে প্রধানত পানি থাকে শতকরা ৯৯ ভাগ। ঘামের মধ্যে মিশ্রণ হিসেবে মূলত সোডিয়াম ক্লোরাইড জাতীয় লবণ, ইলেকট্রোলাইট, অ্যামোনিয়া ও ইউরিয়া মিশ্রণ বিদ্যমান থাকে। যার কারণে এই জাতীয় লবণ দ্বারা খুবই সহজপন্থায় টাইলসের দাগ দূর করতে সক্ষম বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। 
গবেষণার দ্বারা এটি প্রমাণিত হয় যে, ঘামের মধ্যকার ল্যাকটিক অ্যাসিড ও ইউরিয়ার সংমিশ্রণ টাইলসের উপরিভাগের মসৃণ জায়গায় জমে থাকা তৈলাক্ত দাগ, বাথরুমের হালকা ছোপ দাগ, ফ্লোর টাইলসে গাড়ির দাগ নিমিষেই দূর করতে সক্ষম। টাইলস পরিষ্কার করার জন্য বাজারে যে সকল পণ্য পাওয়া যায় তার তুলনায় এই ঘামের লবণের প্রক্রিয়াটি কোন অংশে কম কাজ করে না।

ঘামের লবণ ব্যবহারে ইতিহাসিক দিক

ঘামের লবণ ব্যবহারে ইতিহাসিক দিক নিয়ে আলোচনা করলে প্রথমেই মিশরীয় সভ্যতার কথা মনে করিয়ে দেয়। ইতিহাস পর্যালোচনা করে জানা যায় একটা সময় মিশরীয় সভ্যতার প্রথম দিকে প্রাচীন মিশরীয় দাসেরা প্রাসাদের মেঝে পরিস্কারের কাজে নিজেদের ঘামকে ব্যবহার করত। এক্ষেত্রে, তাদেরকে শারীরিক শক্তি প্রয়োগ করে কঠোর পরিশ্রম দ্বারা ঘাম মিশ্রিত কাপড় দিয়ে মেঝে ঘষে পরিষ্কার করতে হতো। তাদেরই দেখানো পথে আধুনিক সভ্যতাতেও এখন ঘামের লবণ দ্বারা টাইলস পরিস্কার টিপস অনুকরণীয় ও অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে খুবই পরিচিত লাভ করেছে।

ঘামের লবণ ব্যবহারে পরিবেশগত দিক

ঘামের লবণ ব্যবহার পরিবেশগত দিক থেকে বলতে গেলে খুবই ভালো সুফল বয়ে আনছে। বাজারে হরেক রকমের রাসায়নিক বিক্রিয়া সমৃদ্ধ ক্লিনার পণ্য যেমন-ড্যাম্পিক, ড্যাম ক্লিয়ার ব্যাপকভাবে সকলের কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে এই সকল ক্লিনিং প্রসাধনী টাইলসের উপর ব্যবহারে অনেক ক্ষতিকারক দিক রয়েছে যা আমাদের অনেকেরই অজানা। দীর্ঘদিন আধুনিক ক্লিনিং প্রসাধনীগুলো ব্যবহারের দরুন একটা সময় টাইলসের রং নষ্ট হওয়া থেকে শুরু করে টাইলসের ক্ষতি সাধিত হয়। এই সমস্ত ক্লিনিং প্রসাধনীর তেজস্ক্রিয় থাকায় ঘরের পরিবেশও যেমন নষ্ট হয়, নিজেদের ত্বকের লাবণ্যও নষ্ট হয়। তবে, ঘামের লবণ দিয়ে টাইলস পরিষ্কার বায়ু-ক্লিনিং সিস্টেম এর সম্পূর্ণ বিপরীত। এ থেকে কোন প্রকার বিষাক্ত পদার্থ নিঃসৃত হয় না, যার কারণে ঘরের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে। ঘাম জমা করে রাখার প্রয়োজন হয়না বিধায় প্লাস্টিক জাতীয় বোতলের ব্যবহার হ্রাস পায়। ঘামযুক্ত লবণ পানির মধ্যে দ্রবণীয় সমস্যা তৈরি হয় না, ফলে টাইলস দীর্ঘস্থায়ী হয়।

ঘামের ব্যবহারের সামাজিক মূল্যবোধ

শরীরের ঘামের ব্যবহার যদিও নেতিবাচক বলে অনেকেই মনে করে থাকেন, কিন্তু এখন পরিষ্কারের উপাদান হিসেবে এটিকে সামাজিকভাবে গ্রহণ করা হয়। বলা যায় গৃহস্থালির টাইলস পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতায় একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করল ঘামের কৌশলগত ব্যবহার। ভিজ্যুয়াল আর্ট বা ফিউচারিস্টিক হাউসক্লিনিং ইনস্টলেশন হিসেবে এটিকে ব্যবহারে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার উম্মোচিত হয়েছে। 

ঘাম ব্যবহার প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

ঘাম ব্যবহার প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আলোকপাত করতে হলে প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে টাইলস পরিষ্কারের জন্য কোন ধরণের প্রযুক্তি খাত দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিকাশ লাভ করছে। ভবিষ্যতে প্রযুক্তির সাহায্যে ক্লিনিং রোবট তার শরীরের নিঃসৃত ঘামের লবণ দিয়ে কিভাবে ক্লিনিং কাজটি সম্পাদন করবে সেটি এখন দেখার অপেক্ষায়। 
ভবিষ্যতে ঘামের লবণ ব্যবহারের বায়ো-ক্লিনিং সিস্টেম এমনিই একটি প্রযুক্তি হবে যেখানে ঘর্মাক্ত শরীরই হতে পারে পরিষ্কারের প্রধান হাতিয়ার। বিশেষজ্ঞদের ধারণা এমন যে, কসমিটিক জেল এর ন্যায় ঘামের উপাদান সংগ্রহ করেও তৈরি হতে পারে বায়ো-ক্লিনিং জেল। বাড়ীর গৃহকর্তা অথবা পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত কর্মীদের জন্য বিকল্প উপায় হতে পারে এটি। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে জৈবিক ক্লিনিং এই পদ্ধতিটি বেশ চমক সৃষ্টি করতে পারে।

ঘামের লবণ দ্বারা টাইলস পরিষ্কারের প্রয়োজনীয় উপকরন ও প্রস্তুতপ্রণালী

১। প্রয়োজনীয় উপকরণঃ

ঘামের লবণ দ্বারা টাইলস পরিষ্কারের প্রয়োজনীয় উপকরন হিসেবে প্রথমে ঘাম মোছার জন্য একটি তোয়ালে সংগ্রহ করুন। হাতের নাগালে হালকা কুসুম কুসুম গরম পানি রাখুন। ঘরের মধ্যে থাকা অব্যবহৃত পুরাতন টুথব্রাশ এবং নরম প্রকৃতির শুকনো কাপড় নিন। 
এবার চলুন প্রস্তুতপ্রণালী সম্পর্কে জানি।

২। প্রস্তুতপ্রণালীঃ

প্রস্তুতপ্রণালীর মধ্যে প্রথমে আপনি প্রখর রোদ থেকে ঘেমে আসার পর ঘামে ভেজা তোয়ালেটি সংরক্ষণ করুন। তারপর ঘামযুক্ত তোয়ালেটি দিয়ে বাসার মেঝে অথবা দেয়ালের টাইলসের দাগযুক্ত স্থানে একটু আলতোভাবে ঘষুন। আপনি ইচ্ছা করলে ব্রাশ দিয়েও স্ক্রাব করিয়ে দেখতে পারেন। এরপর কুসুম কুসুম গরম পানি টাইলসের উপরে ঢালুন ও পরিষ্কার করে শুকনো কাপড় দিয়ে তা মুছে নিন। ব্যাচ হয়ে গেল ঘামের লবণ দিয়ে টাইলস পরিষ্কার করার অভিনব বায়ো-ক্লিনিং প্রস্তুতপ্রণালী।

উপসংহার

মানুষের শরীরের ঘামের লবণ সংগ্রহ করে টাইলস পরিষ্কার করা এটি শুধু একটি যুগোপযোগী পদ্ধতিই নয়, এটি টাইলস পরিষ্কারের কাজে এক বিস্ময়কর চমক। বিজ্ঞানের ভাষায় আমাদের শরীরও হতে পারে একটি ক্লিনিং উপাদানের স্টক ফ্যাক্টরি। অর্থাৎ, আপনি নিজেও ইচ্ছা করলে পরিক্ষামূলক হিসেবে এই  প্রযুক্তিটিকে প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। টাইলস পরিস্কারের এই অভিনব পদ্ধতি আপনার জন্য একটি নতুন দার উন্মোচিত হলো। আজকের আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। ভবিষ্যতে এমন আরো প্রযুক্তি নির্ভর আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে আজকের মত বিদায় নিলাম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪