OrdinaryITPostAd

খাদ্যে উচ্চ মাত্রার লবণ স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ সম্পর্কে জানুন!!!

লবন এমন একটি উপাদান যা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের জন্য অত্যন্ত অপরিহার্য। তবে উচ্চ মাত্রার লবন গ্রহণে আমরা শারীরিকভাবে কি কি ক্ষতির সম্মুখীন হই এবং খাদ্য তালিকায় অতিরিক্ত লবন গ্রহণে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে অনেকাংশে জেনে নিতে পারবো। চলুন বিস্তারিত জেনে নেই লবণের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এবং খাদ্য তালিকায় উচ্চ মাত্রার লবণ গ্রহণ আমদের শারীরিকভাবে কি কি ক্ষতিসাধন করে।



খাদ্যে উচ্চ মাত্রার লবণ স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ সম্পর্কে জানুন!!!


আমরা সাধারণত জানি, রান্না করা খাবারের স্বাদ অভাবনীয় রাখতে লবণের বিকল্প নেই। তাই আমাদের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে আয়োডিনযুক্ত লবণ গ্রহণের বিকল্প নেই। শরীরের গঠন ঠিক রাখতে ও শরীরের তারল্য সংকট নিয়ন্ত্রণে লবণ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। আবার বেশি পরিমাণে কাঁচা লবণ খাওয়ার দরুন উচ্চ রক্তচাপ বা স্ট্রোকের মত ঝুঁকি থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে_ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ৫ গ্রাম লবণ প্রয়োজন। সেখানে বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করছেন প্রায় ৯ গ্রাম এর বেশি। এটি এখন আতঙ্কের কারণ। কারণ খাদ্যে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও কিডনি বিকল সহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকে অতিমাত্রায় বাড়িয়ে দেয়। তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে প্রায় ১৯ লাখ মানুষ প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাদ্য গ্রহণের কারণে মৃত্যুবরণ করেন।

রান্নার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান লবণ। লবণ ব্যতীত রান্না করার কথা কখনই চিন্তা করা যায় না। এটি রান্নার স্বাদ বাড়িয়ে দেয় অতিমাত্রায়। লবণ যেমন আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে একান্ত জরুরী আবার কাঁচা লবণ খেলে আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতি, পরিমাণ মতো না খেলেও ক্ষতি। তাই লবণ খাওয়ার যেমন উপকার হয়েছে, তেমনি অপকারও রয়েছে। এটি কাঁচা খেলে একদিকে যেমন ক্ষতি অন্যদিকে একদম না খেলেও ক্ষতি। আমাদের শরীরের লিভার, কিডনি ও হার্টের কার্যকালাপ লবণের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। নিম্নে লবণ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো।


লবণের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতাঃ

ক্যালশিয়াম - ক্যালশিয়াম মজবুত হাড় গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ক্যালশিয়াম ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ সহ নানাবিধ জটিল রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে।
আয়রন - আয়রন সাধারণত রক্তস্বল্পতা কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। আয়রন শরিরের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে, ক্লান্তি হ্রাসসহ পেশি শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।
পটাশিয়াম - পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট উপকারী।
সোডিয়াম - সোডিয়াম শরীরের রক্তচাপ কমানো সহ স্ট্রোকের ঝুঁকি রোধ করে। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
সেলেনিয়াম - সেলেনিয়াম জাতীয় পদার্থ থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণের জন্য সহায়ক।
ফ্লুরাইড - ফ্লুরাইড দাঁতের এনামেল ঠিক রাখার পাশাপাশি দাঁতের ক্যাভিটি দূর করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।
জিঙ্ক – জিঙ্ক বয়সজনিত রোগের ঝুঁকি কমিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
ম্যাগনেশিয়াম - ম্যাগনেশিয়াম হাড় গঠনে কার্যকর। এটি মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
কপার - কপারে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হাড়ের ঘনত্বকে রক্ষা করে।
ম্যাঙ্গানিজ - ম্যাঙ্গানিজ জাতীয় পদার্থ ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে।


লবণের অপকারিতাঃ

শরীরে ডিহাইড্রেশন তৈরিতে - আমাদের শরীরের জন্য হাইড্রেট ঠিক রাখা খুবই অত্যাবশ্যক। তবে খাবারে অতিরিক্ত কাঁচা লবণ গ্রহণ শরীরকে ডিহাইড্রেশন করে তোলে। এক্ষেত্রে আপনার খাদ্য তালিকা থেকে এই উপাদানটি বাদ দেয়া একান্ত জরুরী।
উচ্চ রক্তচাপ - অপরিমিত লবণ খাওয়ার দরুন রক্ত চাপ ক্রমশই বেড়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে যে সকল ব্যক্তির ব্লাড প্রেসার এর সমস্যা রয়েছে সে সকল ব্যক্তির কাঁচা লবণ পরিহার করা উচিত।
ওজন হ্রাস - লবণ আমাদের শরীরের চর্বি দ্রুত হ্রাস করতে সহায়তা করে। অতিমাত্রায় লবণ খেলে পর্যায়ক্রমে ওজন আরও কমে যেতে পারে। তাই যাদের ওজন কম তাদের লবণ না খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
হাড়ের ক্ষতি - অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের দরুন হাড় থেকে ক্যালসিয়াম নিঃসৃত হতে পারে। অতিমাত্রায় ক্যালসিয়াম নিঃসৃত হওয়ার দরুণ অস্টিওপরোসিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
স্ট্রোকের ঝুঁকি - জাঙ্ক ফুড বা স্ট্রিট ফুডগুলিতে বেশি পরিমাণে লবণ থাকে। এ জাতীয় খাবার শরীরে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে থাকে। তবে এ ধরনের খাবারের প্রতি আমরা প্রায় ঝুঁকে পড়ি। যার দরুন আমাদের হার্টের রোগ এবং স্ট্রোক জনিত রোগের কবলে পড়তে হয়।
কিডনির সমস্যা - অতিমাত্রায় লবণ খাওয়ার দরুন হৃদ চাপ বেড়ে যায়। ফলে কিডনি থেকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম নিঃসৃত হয় এবং কিডনিতে পাথর সৃষ্টি হয়। তাই কিডনির সমস্যা থেকে রেহাই পেতে কাঁচা লবণ পরিহার করা একান্ত জরুরী।
ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি - অতিমাত্রায় লবণ সেবনের কারণে ব্লাড প্রেসার ক্রমশয়ই বৃদ্ধি পায়। যার দরুণ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বা ঝুঁকি থাকে।


প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে খাদ্যে উচ্চ মাত্রার লবণ গ্রহণে আমরা শারীরিকভাবে কি কি ক্ষতির সম্মুখীন হই এবং খাদ্য তালিকায় অতিরিক্ত লবন গ্রহণে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পেলাম। আজকের এই কনটেন্টের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪