OrdinaryITPostAd

মাংসাশী উদ্ভিদ সম্পর্কে জানুন!!!

সাধারণত উদ্ভিদ বলতে, যেসব জীবের শরীর মূলত ডাল-পালা, শিকড় ও পাতায় বিভক্ত অর্থাৎ মাটি ভেদ করে উপরের দিকে উঠে এবং এক স্থান থেকে অন্যত্র চলাফেরা করতে পারে না তাদেরকে উদ্ভিদ বলে। উদ্ভিদ জীবের একটি স্বয়ংক্রিয় বৈশিষ্ট্য হলো এরা সূর্যের আলো থেকে শক্তির সঞ্চয় করে সালোকসংশ্লেষণ এর মাধ্যমে খাদ্য গ্রহণ করতে পারে। তবে, কিছু কিছু উদ্ভিদ রয়েছে তারা কিছুটা ব্যতিক্রম। এদের মধ্যে অন্যতম হলো মাংসাশী উদ্ভিদ। প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে মাংসাশী উদ্ভিদ কি? কি তার পরিচয়? সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করবো।

মাংসাশী উদ্ভিদ সম্পর্কে নিম্নোক্ত সূচিপত্র থেকে সহজেই জেনে নিনঃ 


উদ্ভিদের যে প্রাণ আছে এটা প্রথম আবিষ্কার করেন স্যার জগদীস চন্দ্র বসু। পৃথিবীর আদিকাল থেকে প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে বলে এমনটি ধারণা করা হয়। পৃথিবীতে বহুল প্রজাতির মাংসাশী উদ্ভিদ রয়েছে তার মধ্যে ভিনাস ফ্লাইট্র্যাপ এর মতো মাংসাশী উদ্ভিদ বেশ জনপ্রিয়। চলুন জেনে নেই, মাংসাশী উদ্ভিদ কি ? কি তার পরিচয়

মাংসাশী উদ্ভিদ কি ?
আমরা অনেকেই রয়েছি যারা বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা রয়েছে। তবে মাংসাশী উদ্ভিদ সম্পর্কে অনেকেরই কিছুটা হলেও নিছক ধারণা রয়েছে। এখন অনেক উন্নত দেশে মানুষ নিজের বাসাতে ভিনাস ফ্লাইট্র্যাপের মতো মাংসাশী উদ্ভিদ রাখছেন। তাই, এটি দিন দিন অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রকৃতির এক আশ্চর্যজনক সৃষ্টি এমন প্রকৃতির মাংসাশী উদ্ভিদ। এই জাতীয় উদ্ভিদকে শিকারি উদ্ভিদ হিসেবেও বলা যেতে পারে। মাংসাশী উদ্ভিদের রয়েছে বিভিন্ন প্রকার ফাঁদ বা কৌশল।.উদাহরণস্বরূপ সারসেনিয়া তৈরি করে এমন ফাঁদ।

বার্ন্ড ভাইলব্রেনার_আনুমানিক ৩২ বছর পূর্বে জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সিটি ফ্রাইনশাইমে একটি মাংসাশী উদ্ভিদ নার্সারি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই আলোচিত নার্সারিতে বহুল প্রজাতির মাংসাশী উদ্ভিদ রয়েছে যা এখন জার্মানির বৃহত্তম নার্সারি হিসেবে সুপরিচিত। 
কি তার পরিচয়?
জীব জগতের মধ্যে মাংসাশী উদ্ভিদের রয়েছে ভিন্ন কৌশল। এই উদ্ভিদটি সাধারণত পাতার এক প্রান্তে ও মুখের কাছে মধু নিঃসরণ করে থাকে। নিঃসরণকৃত মধু কীট-পতঙ্গ ও পোকামাকড়কে আকর্ষিত করে থাকে। এইভাবে আকর্ষিত করার দরুন তারা মাংসাশী উদ্ভিদ গাছের নিকট থেকে মধু খেয়ে থাকে।  মাংসাশী উদ্ভিদ গাছটি ওই সময় এক প্রকার গ্যাস নির্গত করে থাকে। নির্গত গ্যাসের কারণে পাতায় আশ্রয় নেয়া পোকামাকড়গুলোর মধ্যে অনেকটা ঝিমঝিম ভাব শুরু হয়। উদ্ভিদ গাছের নীচের টিউবে সামান্য পরিমাণে রোয়া দেখা যায়, রোয়াগুলো নিচের দিকে নোয়ানো অবস্থায় থাকে। অর্থাৎ, উপরের দিকে উঠা কঠিন হওয়ায় এক পর্যায়ে তারা নীচের দিকে পড়ে যায় ও পাচক এনজাইমযুক্ত তরলে পড়ে ডুবে যায় এবং মাংসাশী উদ্ভিদটি তাদের হজম করে ফেলে। এভাবেই মাংসাশী উদ্ভিদ জীবন্ত কীট-পতঙ্গ ও পোকামাকড়কে খাওয়ার জন্য ফাঁদ পেতে থাকে। কিছু মাংসাশী উদ্ভিদ রয়েছে যারা পিপীলিকাকে আকৃষ্ট করার জন্য মইয়ের মতো আকৃতি ধারণ করে যাতে সহজেই তারা ভয়ংকর ফাঁদে পড়ে। আবার কিছু মাংসাশী উদ্ভিদ রয়েছে যারা আঠার ফাঁদ পেতে থাকে। 

নিম্নে কিছু মাংসাশী উদ্ভিদ এর আক্রমণের ধরণ তুলে ধরা হলঃ 

ভিনাস ফ্লাইট্র্যাপ উদ্ভিদ
মাংসাশী উদ্ভিদের মধ্যে সবচেয়ে সুপরিচিত হলো মার্কিন পূর্ব উপকূল থেকে উৎপত্তিকৃত ভিনাস ফ্লাইট্র্যাপ। প্রাথমিক অবস্থায় ভিনাস ফ্লাইট্র্যাপ উদ্ভিদ তার ফাঁদে মধু নিঃসৃত করে থাকে। এর অভ্যন্তরে ছোট আকৃতির লোম থাকে। পোকামাকড় যে সময় মধু চাটতে থাকে, তখনই লোমগুলো সক্রিয় হতে থাকে। প্রথমবার উদ্ভিদটি সময় নিলেও দ্বিতীয়বার উদ্ভিদ বুঝতে পারে পাতায় কিছু একটা বসেছে এবং রীতিমত মধু গ্রহণ করছে। তখন তৎক্ষণাত উদ্ভিদটি তার পাতার পাঁপড়ি বন্ধ করে দেয়। উক্ত পাঁপড়ি থেকে পিঁপড়ার মতো ছোট প্রাণী বেরিয়ে আসতে পারলেও মোটা আকৃতির পোকামাকড় অথবা মাছি জাতীয় প্রাণী বের হতে পারে না। তারপরই উদ্ভিদ তার রহস্যময় কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমে আটকে পড়া প্রাণীটি কি প্রোটিন সমৃদ্ধ কি-না তা উপলব্ধি করে। যদি তা প্রোটিন সমৃদ্ধ না হয় তখন মাংসাশী উদ্ভিদটি দ্রুতই পাতা খুলে দিয়ে শিকারকে বেরিয়ে যেতে সুযোগ করে দেয়। প্রাণীটি যদি প্রোটিন সমৃদ্ধ হয় তবেই মাংসাশী ভিনাস ফ্লাইট্র্যাপ উদ্ভিদটি সেটি হজম করতে শুরু করে। তাই, পৃথিবীতে মাংসাশী উদ্ভিদগুলোর মধ্যে অসাধারণ কৌশলী ভিনাস ফ্লাইট্র্যাপ উদ্ভিদ এক অনন্য দৃষ্টান্ত ।

সানডিউ উদ্ভিদ
পৃথিবীতে মাংসাশী উদ্ভিদগুলোর মধ্যে সানডিউ উদ্ভিদ অন্যতম। এই উদ্ভিদটি প্রথমত প্রাণীকে শিশিরের দিকে আকৃষ্ট করে। সাধারণত সানডিউ বলতে আঠালো ফোঁটাগুলোকে বোঝায় যা সূর্যের আলোতে ঝলমল করে। এ জাতীয় মাংসাশী উদ্ভিদের উপর দিয়ে কোন প্রকার কীটপতঙ্গ উড়ে যাওয়ার প্রাক্কালে এর আকর্ষণীয় গন্ধ অনুভব করে। সুভাষিত গন্ধের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে একবার এর ওপর বসলে আঠালো ফোঁটাগুলোতে আটকা পড়ে। সানডিউ উদ্ভিদটি তার শুঁড় দিয়ে পোকাটিকে পাতার মাঝখানে ঠেলে দেয়। কখনও কখনও পাতাটি পোকার চারপাশে কুঁকড়ে যায় এবং এনজাইমগুলি আটকে থাকা শিকারকে হজম করতে শুরু করে। এভাবেই সানডিউ উদ্ভিদটি তার শিকারি কার্যক্রম করে থাকে।
বাটারওয়ার্টও উদ্ভিদ
মাংসাশী উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম হল বাটারওয়ার্টও উদ্ভিদ। এই উদ্ভিদটি তার পাতায় আঠালো তরল দিয়ে ছোট পোকা শিকার করে। এজাতীয় উদ্ভিদ এর বিশেষ পরিচিতি হল, এটি যত বেশি শিকার করে ততই বড় হতে থাকে এবং ফুল ফোটায়। এটিই বাটারওয়ার্টও উদ্ভিদ এর শিকারি কার্যক্রমের রহস্য।


প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে উদ্ভিদ জগতের মধ্যে মাংসাশী উদ্ভিদ কি? কি তার পরিচয়? বিভিন্ন প্রকার মাংসাশী উদ্ভিদ সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পেলাম। আজকের আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪