OrdinaryITPostAd

দেশীয় কোন মাছে ওমেগা ৩ বেশি থাকে জানুন

প্রিয় পাঠক আপনি কি দেশীয় কোন মাছে ওমেগা ৩ বেশি থাকে তার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলে দেশীয় কোন মাছে ওমেগা ৩ বেশি থাকে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই দেশীয় কোন মাছে ওমেগা ৩ বেশি থাকে জানতে হলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
পেজ সূচিপত্রঃ নিচে আপনাদের জন্য বাংলাদেশে পানির তারতম্য ভেদে দেশীয় মাছের প্রকৃতি এবং দেশীয় ওমেগা-৩ জাতীয় মাছ সম্পর্কে ধাপে ধাপে আলোচনা করা হয়েছে। যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই পানির তারতম্য ভেদে দেশীয় মাছের প্রকৃতি ও দেশীয় ওমেগা-৩ মাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই দেরি না করে শুরুতে বাংলাদেশে পানির তারতম্য ভেদে দেশীয় মাছের প্রকৃতি সম্পর্কে জেনে নিন।

বাংলাদেশে পানির তারতম্য ভেদে দেশীয় মাছের প্রকৃতি

বাংলাদেশ ঋতু প্রকৃতির দিক থেকে নাতিশীতোষ্ণ দেশ পরিচিত। আবহাওয়া ও পানির দিক বিবেচনা করে এক এক এলাকার আবহাওয়া ও পানির স্বাদের উপর মাছের স্বাদেও অনেকসময় ভিন্নতা দেখা দেয়। বাংলাদেশের পানির প্রকৃতির দিক বিবেচনা করে তিন ধরণের পানির মাছ দেখতে পাওয়া যায়। সেগুলো নিম্নোক্তভাবে ভাগ করা যেতেঃ-

মিঠা পানির মাছঃ 

মূলত পুকুর অথবা ডোবা মিঠা পানির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। মিঠা পানিতে যেসকল মাছ দেখতে পাওয়া যায় তন্মধ্যে রুই মাছ, কাতল, মৃগেল, পাঙ্গাস, খইলশা, পুঁটি, টাকি মাছ, নাইলোটিকা, হুয়াইল্লা, শিং, মাগুর, কৈ ইত্যাদি মাছ বেশ দেখতে পাওয়া যায়। মিঠা পানির মাছ যেমন স্বাদে অতুলনীয় তেমনি সহজলভ্য। গ্রামাঞ্চলের বাড়ীর পাশের পুকুর, পুশকুন্ডি মিঠা পানির মাছের অভয়ারন্য হিসেবে সুপরিচিত।

খাল-বিল, হাউর-বাউরের উল্লেখযোগ্য ছোট মাছঃ 

বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষে খাল-বিল, হাউর-বাউরের দেশ। এদেশের খাল-বিল, হাউর-বাউরগুলোতে বিশেষ করে ছোট আকৃতির মাছ খুবই দেখতে পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-পুঁটি, খইলশা, মলা, টেংরা ও চান্দা মাছ উল্লেখযোগ্য। 

উপকূলীয় অঞ্চলের নদীনালার মাছঃ 

উপকূলীয় অঞ্চলে সাগরের স্রোতে অনেক মাছ তীরে এসে পাড়ি দেয়। আবার অনেককেই দেখা যায়, সাগরের পানিকে সংরক্ষণ করে নদীনালার মাছ, যেমন-ইলিশ, লইট্টা, রূপচাঁদা, বাটা ইত্যাদি প্রকৃতির মাছ চাষ করা হয়ে থাকে। আশা করি পানির তারতম্য ভেদে দেশীয় মাছের প্রকৃতি সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানতে পেরেছেন। এবার চলুন দেশীয় ওমেগা-৩ জাতীয় মাছ কেমন হয় তা জেনে নিন।

দেশীয় ওমেগা-৩ জাতীয় মাছ

ওমেগা-৩ হচ্ছে একজাতীয় ফ্যাটি অ্যাসিড যা আমাদের মানবদেহের জন্য অত্যন্ত অপরিহার্য। শরীরে যেসকল পুষ্টিকর উপাদান দরকার হয় তার মধ্যে ওমেগা-৩ একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। এই ওমেগা-৩ এর কারণে শরীরের অত্যন্ত মূল্যবান অঙ্গগুলোর মধ্যে যেমন-হৃদযন্ত্র, ব্রেইন, চোখ, ত্বক ও স্নায়ুতন্ত্র ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের অনেকেই মনে করেন যে, ওমেগা-৩ কেবল সামুদ্রিক মাছেই বেশি পাওয়া যায় বিষয়টি ঠিক তেমন নয়। বাস্তব চিত্র উপলব্দি করলে দেখা যায়, আমাদের দেশীয় পুকুর, খাল-বিল ও নদী-নালায় উৎপাদিত মাছেও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পাওয়া যায়। বলা যায় সামদ্রিক মাছের অয়েলের চাইতে দেশীয় মাছে যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড অয়েল পাওয়া যায় তা বিকল্প উৎস হিসেবেও কাজ করতে পারে। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় এই মাছগুলো আপনি যদি যথাযথ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার হার্ট, ব্রেইন এর জন্য, চোখ ও ত্বক ভালো রাখতে একপ্রকার উপশম হিসেবে কাজ করবে। দেশীয় ওমেগা-৩ এর এমন প্রাপ্যতাকে আমরা যদি যথাযতভাবে মুল্যায়ন করতে চাই, তাহলে অবশ্যই খাদ্যাভ্যাসের দিকে আমাদেরকে সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখাটা একান্ত জরুরী। এবার চলুন বিস্তারিত জেনে নেই, দেশীয় ওমেগা-৩ জাতীয় মাছগুলো কেমন হয়, এর পুষ্টিগুণ কি ? প্রথমে আলোচনা করবো বাঙ্গালীর পছন্দের মাছ ইলিশ মাছ নিয়ে। চলুন আলোচনায় যাই।

ইলিশ মাছ (Hilsa fish)

বাংলাদেশের জাতীয় মাছের নাম ইলিশ এটি আমরা কম বেশী সকলেই অবগত আছি। ইলিশ মাছের ইংরেজি রূপ হলো Hilsa। আবার কখনও একে Ilish বলেও সম্বোধন করতে শোনা যায়। বাঙ্গালির পছন্দের মাছের মধ্যে সবচাইতে আকর্ষণীয় মাছ হচ্ছে ইলিশ। বাঙ্গালির ১লা বৈশাখের পান্তা ভাতের মূল আকর্ষণ হল এই ইলিশ। এই ইলিশেই রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যা আমাদের মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। একটি ১০০ গ্রাম ইলিশে রয়েছে ১.৫-২.৫ গ্রাম পর্যন্ত ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার DHA ও EPA যা অন্যান্য দেশীয় মাছের চাইতে অনেক বেশি। হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে আপনি প্রয়োজন অনুপাতে ইলিশ মাছ খেতে পারেন। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় নারীদের জন্য খুবই উপকারী হচ্ছে ইলিশ মাছ। পুষ্টিবিদরা মনে করেন, ইলিশ মাছ কেবল বাংলাদেশের জাতীয় মাছই নয়, এই মাছ থেকে ওমেগা-৩ উপাদান প্রাপ্তিতে শক্তিশালী উৎসও হতে পারে।  হৃদরোগের ঝুঁকি এড়ানোর পাশাপাশি আপনার ব্রেইন, শরীরের ত্বক ও চোখের সুস্থতার জন্য ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের বিকল্প নেই। এর পরে আলোচনায় আসবো পুঁটি মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড নিয়ে। চলুন আলোচনায় আসি।

পুঁটি মাছ (Puntius fish)

পুঁটি মাছ মূলত স্বচ্ছ পানির মাছ। পুঁটি মাছকে আমরা ইংরেজিতে 'Puntius fish' হিসেবেই চিনে থাকি। বাংলাদেশের পুকুর, খালবিল ও নদী-নালায় পুঁটি মাছ একটি দৃষ্টিনন্দন মাছ। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এই মাছটি আপনি খুব সহজেই হাতের নাগালে পেতে পারেন। ছোট হলেও এই মাছের পুষ্টিগুণ অন্যান্য মাছের তুলনায় কোন অংশে কম নয়। অনেক সময় পুঁটি মাছকে ছোট আকৃতির হওয়ায় একে Small fry হিসেবেও জানি। ছোট আকৃতির হলেও পুঁটি মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ এর পর্যাপ্ত উপাদান। দেশি পুঁটির পাশাপাশি বিদেশী নানা প্রজাতির পুঁটি বাজারে দেখতে পাওয়া যায়। তবে, দেশি জাতের পুঁটির একটি বিশেষ গুন হল এটি কাঁটাসহ খেতে পাড়া যায়। আমাদের চোখ ও মস্তিষ্কের জন্য এই মাছের উপাদান বেশ উপকারী। একটি ১০০ গ্রাম পুঁটির মধ্যে আনুমানিক ০.২–০.৪ গ্রাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বিদ্যমান থাকে। যদিও সামুদ্রিক মাছের তুলনায় এই মাছ থেকে ওমেগা-৩ এর প্রাপ্যতা কম তবুও এটি ALA (Alpha-linolenic acid) জাতীয় উপাদান সরবরাহ করে। পুঁটি মাছের পরে এবার আলোচনা করবো মলা বাঙ্গালীর আরও একটি পছন্দের মাছ সম্পর্কে। চলুন বিস্তারিত জানি।

মলা মাছ (Mola carplet)

দেশীয় যেসব ছোট প্রকৃতির মাছ রয়েছে তার মধ্যে মলা মাছ খুবই পছন্দনীয় ও স্বাদেভরপুর একটি মাছ। মলা মাছকে ইংরেজিতে Mola carplet বলা হয়ে থাকে। যার বৈজ্ঞানিক নাম Amblypharyngodon microlepis। এটি মূলত সাধু পানির মাছ। চোখের স্বাস্থ্যের উপকারসহ শিশুদের মানুষিক বুদ্ধি বিকাশে এই মাছ অন্যান্য ছোট মাছের চাইতে কোন অংশে কম নয়। সামুদ্রিক মাছে যে পরিমাণ ওমেগা-৩ বিদ্যমান থাকে মলা মাছে সামান্য পরিমাণে থাকলেও এর মধ্যে অন্তর্নিহিত রয়েছে ALA (Alpha-linolenic acid) যা আমাদের শরীর গঠনে সহায়তা করে। গবেষণার দ্বারা জনা যায়, প্রতি ১০০ গ্রাম মলা মাছের মধ্যে ০.২–০.৩ গ্রাম পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বিদ্যমান থাকে। মলা মাছের পর এবার আলোচনা করবো বাঙ্গালীর আরও একটি পছন্দের টেংরা মাছ সম্পর্কে। চলুন জেনে নেই।

টেংরা মাছ (Tengra fish)

বাংলাদেশের জলজ ছোট মাছগুলোর মধ্যে টেংরা মাছ খুবই পছন্দের একটি মাছ। টেংরা মাছ মূলত মিঠা পানির পাছ। ইংরেজিতে টেংরা মাছকে বলা হয়ে থাকে Tengra fish। যার বৈজ্ঞানিক নাম হল Batasio tengana। গ্রামাঞ্চলের নদীনালা, খাল-বিল ও পুকুরে টেংরা পাওয়া যায়। এই মাছের চর্বিতে ওমেগা-৩ এর প্রাপ্যতা বেশ প্রশংসনীয়। এই মাছটি কাঁটা মাছ। ছোট বড় মধ্যবয়সী সকলেই এই মাছকে রান্না করা তরকারীতে খেতে খুবই পছন্দ করে থাকেন এবং খাবারে আনে নতুন মাত্রা। আমাদের মধ্যে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে এই টেংরা মাছ খাবারের তালিকায় রেখে খেতে পারেন। আবার ডায়াবেটিক্সে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এর উপদান খুবই উপকারী। টেংরা মাছ ALA সরবরাহ করে থাকে, যা মানুষের শরীরে EPA ও DHA-তে রূপান্তর হতে পারে। গবেষণায় পাওয়া যায়, প্রতি ১০০ গ্রাম উপযুক্ত টেংরা মাছে ০.৩ থেকে ০.৫ গ্রাম ওমেগা-৩ এর উপাদান বিদ্যমান থাকে। যাতে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন B-12, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস যা আমাদের শরীরে রক্তস্বল্পতা দূর করতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে।

শিং মাছ (Heteropneustes fossilis)

শিং মাছ মূলত দেশীয় মাছ যা বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে পাওয়া যায়। ছোট আকৃতির হলেও এই মাছটি ব্যাপক গুনাগুনে সমৃদ্ধ একটি মাছ। শিং মাছের ইংরেজি নাম হল stinging catfish বা Heteropneustes fossilis. তবে শিং মাছ Heteropneustes fossilis নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত। এটি বিশেষ করে মিঠা পানির জলাশয়ে অর্থাৎ বাংলাদেশের নদি-নালা ও পুকুরে বেড়ে উঠে। শিং মাছের শরীরে কাঁটা থাকার কারণে একে stinging catfish বলা হয়ে থাকে। এশিয়া ভিত্তিক দেশগুলো শিং মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে বেশ পরিচিত। শিং মাছে আছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, মিনারেল ও ওমেগা-৩ যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। ছোট থেকে বড় যারাই রক্তশূন্যতায় ভুগছেন এবং যাদের স্নায়বিক সমস্যা রয়েছে তারা ইচ্ছা করলে এই মাছটিকে বেছে নিতে পারেন। শিং মাছের ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের হৃদযন্ত্র ও স্নায়ুতন্ত্র সুস্থ্য রাখতে কার্যকর। শিং মাছও ALA জাতীয় উপাদান সরবরাহ করে, যা আমাদের শরীরে EPA ও DHA-তে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু রূপান্তরের মাত্রা কম হলেও তা মানবদেহের জন্য যথেষ্ট। শিং মাছের প্রতি ১০০ গ্রামের মধ্যে ওমেগা-৩ উপাদান থাকে ০.৩ থেকে ০.৫ গ্রাম। যার মধ্যে বিদ্যমান থাকে ভিটামিন B12, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস যা আমাদের রক্তস্বল্পতা ও হাড় গঠনে সহায়তা করে।

মাগুর মাছ (Walking Catfish)

বাংলাদেশের নদী-নালায় বেড়ে উঠা আরও একটি চাষযোগ্য মাছ হচ্ছে মাগুর মাছ। মোট কথা এই জলজ মাছটি ছোট-বড় সকলেরই অনেক পছন্দনীয় মাছ। স্বাদে ও গুনে অনেক বড় প্রজাতির মাছ থেকেও এটি কোন অংশে কম নয়। এই মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। ইংরেজিতে মাগুর মাছকে বলা হয় Walking Catfish। যার বৈজ্ঞানিক নাম হল Clarias batrachus। মাগুর মাছ জলজ মাছ হলেও এটি পানি ছাড়া কাঁদা মাটিতেও অনেক সময় ধরে বেঁচে থাকতে পারে। এই মাছটি আঁশবিহীন হওয়ায় হজম করতে তেমন একটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় না। বিশেষ করে ছোটদের জন্য এই মাছটি খাবারের উপযোগী হিসেবে আপনি বেঁছে নিতে পারেন। মাগুর মাছও ALA সরবরাহ করে, যা শরীরে EPA ও DHA-তে রূপান্তরিত হতে পারে। প্রতি ১০০ গ্রাম মাগুর মাছে আনুমানিক ০.৩ হতে ০.৫ গ্রাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বিদ্যমান থাকে। 

চাপিলা মাছ (Indian River Shad)

বাংলাদেশের নদী-নালা, হাওর-বাওরে চাপিলা মাছ খুবই সুস্বাদু একটি মাছ। ছোট আকৃতির হলেও চাপিলা মাছ বেশ পুষ্টিগুণে ভরপুর। ইংরেজিতে চাপিলা মাছকে বলা হয় Indian River Shad। যার বৈজ্ঞানিক নাম হল Gonialosa manmina Wikipedia। চাপিলা মাছে ওমেগা-৩ এর যে ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে তা আমাদের হার্টের প্রক্রিয়াকে ভালো রাখতে, স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা দূরীকরণে ও ত্বক ভালো রাখতে বিশেষভাবে উপকারী। স্বাদের দিক থেকে চাপিলা মাছ অনেকটা মিষ্টি প্রকৃতির। গাঁয়ের কাঁটা হয় নরম যা সহজেই হজম হয়ে থাকে। চাপিলা মাছেও Alpha-linolenic acid এর আদিক্য রয়েছে যা রূপান্তরিত হয়ে মানব দেহে তা সরবরাহ করে। একটি ১০০ গ্রাম চাপিলা মাছে আনুমানিক ০.২ থেকে ০.৪ গ্রাম ওমেগা-৩ অন্তর্নিহিত থাকতে পারে। তবে, এক্ষেত্রে চাপিলা মাছের ওমেগা-৩ এর পরিমাণ কম-বেশি নির্ভর করে খাদ্যগ্রহণ, পরিবেশ এবং জাতের উপর।

বেলে মাছ (Tank goby)

বাংলাদেশের জলাধারে, নদী-নালা, খাল-বিল বিশেষ করে হাওরে এই মাছটি খুবই দেখতে পাওয়া যায়। ছোট হলেও এই মাছটি খেতে খুবই সুস্বাদু এবং স্বাদে ও গুণে খুবই জনপ্রিয়। বেলে মাছের ইংরেজিরূপ হল Tank goby। বৈজ্ঞানিকভাবে একে Glossogobius giuris বলা হয়ে থাকে। অল্প পরিমাণে দেখা গেলেও এই মাছ থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। সামুদ্রিক মাছে ওমেগা-৩ যে পরিমাণে পাওয়া যায় নদী-নালার মাছ হিসেবে বেলে মাছে তার পরিমাণ অল্প হলেও রয়েছে। শহরাঞ্চল ও গ্রামাঞ্চলে এই মাছটি এখন পছন্দের খাদ্যতালিকায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বেলে মাছও ALA সরবরাহ করে থাকে, যা আমাদের শরীরে EPA ও DHA-তে রূপান্তরিত হয়ে থাকে, যদিও রূপান্তরের পরিমাণ কম। গবেষণায় জানা যায়, একটি ১০০ গ্রাম বেলে মাছে আনুমানিক ০.২ থেকে ০.৪ গ্রাম ওমেগা-৩ জাতীয় ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। মাছের খাদ্যাভ্যাস, পরিবেশ ও প্রজাতির উপরেও এর পরিমাণ সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হতে পারে।

লইট্টা মাছ (Bombay duck)

লইট্টা মাছ মূলত একটি সামুদ্রিক মাছ যা বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল যেমন-খুলনা, মংলা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় খুব বেশী দেখতে পাওয়া যায়। লইট্টা মাছের ইংরেজি রূপ হল Bombay Duck। অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন এই মাছের নাম কেন Duck। Duck এর বাংলা অর্থ হল হাঁস। তবে হাঁসের সাথে এর নামের কোন সম্পর্ক নেই। ইংরেজ আমলে বিশেষ করে এই মাছকে প্রক্রিয়া করে যে শুঁটকি উৎপাদিত হতো এবং তা মালগাড়ির মাধ্যমে ভারতের বোম্বেতে নেওয়া হতো, মূলত তখন থেকেই এই মাছটি Bombay Duck হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এই মাছটি আপনি ইচ্ছা করলে ফ্রাই করে অথবা রান্না করেও খেতে পারেন। সামুদ্রিক প্রজাতির হলেও এই মাছটি পর্যাপ্ত ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ। এটি একপ্রকার লিজার্ডফিশ জাতীয় মাছ। আকৃতির দিক থেকে এটি সাধারণত ২৫ থেকে ৪০ সেঃ মিঃ পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। লইট্টা মাছ সরাসরি EPA ও DHA সরবরাহ করে বলে তা মানবদেহের জন্য বিশেষভাবে কার্যকরী ওমেগা-৩। গবেষণায় জানা যায়, প্রতি ১০০ গ্রাম লইট্টা মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে আনুমানিক ১.৫ গ্রাম ।

শেষ কথা

আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন এবং দেশীয় কোন মাছে ওমেগা-৩ বেশী থাকে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটিতে বাংলাদেশে পানির তারতম্য ভেদে দেশীয় মাছের প্রকৃতি সম্পর্কেও কিছুটা আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি, এই সকল তথ্যগুলো আপনাদের উপকারে আসবে। তাই এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেশি বেশি জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করবেন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪