মায়ের দুধ মহান আল্লাহর অপার নেয়ামত
মায়ের দুধ মহান আল্লাহর এক অপার নেয়ামত। এটি শুধু শিশুর শারীরিক পুষ্টির জন্যই নয়, বরং তার মানসিক ও সামাজিক বিকাশের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম ধর্মে মাতৃদুগ্ধের গুরুত্ব বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে মা তার সন্তানকে পূর্ণ দুই বছর দুধ পান করাবে যদি সে দুধ খাওয়ানোর পূর্ণ মেয়াদ সম্পন্ন করতে চায়। প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে মায়ের দুধ মহান আল্লাহর অপার নেয়ামত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করবো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মায়ের দুধে এমন সব পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং তাকে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। নবজাতকের জন্য প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র মায়ের দুধই যথেষ্ট, কারণ এতে শিশুর প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান সঠিক অনুপাতে বিদ্যমান থাকে। এছাড়া, মায়ের দুধ পান করার মাধ্যমে মা ও সন্তানের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা শিশুর সামাজিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইসলাম ধর্মে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর গুরুত্ব এতটাই যে, এটি মায়ের জন্য ওয়াজিব করা হয়েছে এবং কোনো অযৌক্তিক কারণে দুধ পান করানো বন্ধ করলে তা গুনাহ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ইসলামিক দৃষ্টিতে ফুল
ইসলামে মাতৃদুগ্ধের গুরুত্ব
মায়ের দুধ নিঃসন্দেহে আল্লাহর এক মহান নেয়ামত। এটি শুধু শিশুর জন্য পুষ্টিকর খাদ্য নয়, বরং তার শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য। ইসলাম ধর্মে মাতৃদুগ্ধের গুরুত্ব অত্যন্ত স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন:"আর সন্তানবতী নারীরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দুবছর দুধ খাওয়াবে, যদি দুধ খাওয়ানোর পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করতে চায়।" (সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত ২৩৩)
রাসূল (সা.) বলেছেন, "শিশু জন্মের পরপর মায়ের বুক থেকে যে দুধ আসে তা শিশুর জন্য অত্যন্ত সুষম, উপাদেয় ও উপকারী খাবার।" (জামে তিরমিজি)
মাতৃদুগ্ধের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা
মায়ের দুধে এমন সব পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি শিশুকে অ্যালার্জি, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, ডায়রিয়া, যক্ষ্মা, মেনিনজাইটিস, অন্ত্রপ্রদাহসহ বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।
আরও পড়ুনঃ দুই শব্দের ছেলেদের ইসলামিক নাম অর্থসহ
মাতৃদুগ্ধ ও মা-সন্তানের সম্পর্ক
শিশুকে বুকের দুধ পান করালে মা ও সন্তানের মধ্যে গভীর সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। এটি শিশুর মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মাতৃদুগ্ধের সামাজিক ও ধর্মীয় দিক
মায়ের দুধ ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি আল্লাহর এক অপার নেয়ামত, যা শিশুর সুস্থতা, সুরক্ষা ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইসলামে মাতৃদুগ্ধ পান করানোকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। কোনো মা যদি অকারণে দুধ পান করানো বন্ধ করেন, তবে তা গুনাহের কাজ বলে বিবেচিত হয়।
পবিত্র কুরআনে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর বিষয়ে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সূরা বাকারা (২:২৩৩)-তে বলা হয়েছে:
"মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দুই বছর দুধ পান করাবে, যদি তারা দুধ খাওয়ানোর পূর্ণ মেয়াদ সম্পন্ন করতে চায়।"
এছাড়া সূরা লুকমান (৩১:১৪)-তে বলা হয়েছে:
"আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করে এবং দুই বছর দুধ পান করায়।"
ইসলামে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর গুরুত্ব এতটাই যে, এটি শুধু শারীরিক পুষ্টির জন্য নয়, বরং সন্তানের মানসিক ও সামাজিক বিকাশের জন্যও অপরিহার্য। নবজাতকের জন্য প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র মায়ের দুধই যথেষ্ট, কারণ এতে শিশুর প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান সঠিক অনুপাতে বিদ্যমান থাকে।
রাসূল (সা.)-ও মাতৃদুগ্ধ পান করানোর প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন:
"শিশু জন্মের পরপর মায়ের বুক থেকে যে দুধ আসে, তা শিশুর জন্য অত্যন্ত সুষম, উপাদেয় ও উপকারী খাবার।" (জামে তিরমিজি)
ইসলামে দুধ সম্পর্কিত বিধান
দুধ সম্পর্কিত আত্মীয়তা:
যদি কোনো শিশু দুই বছরের মধ্যে অন্য নারীর দুধ পান করে, তবে সে তার দুধ-মা এবং তার পরিবারের সদস্যদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে তোলে।
মাতৃদুগ্ধ পান করানোর দায়িত্ব:
ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী, মায়ের ওপর ওয়াজিব যে সে তার সন্তানকে দুধ পান করাবে, যদি শারীরিক বা অন্য কোনো বাধা না থাকে। মায়ের দুধ শুধু পুষ্টি নয়, এটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং তাকে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানও বলে যে, শিশুর জন্য মায়ের দুধের কোনো বিকল্প নেই।
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে মায়ের দুধ মহান আল্লাহর অপার নেয়ামত সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান আহরণ করলাম। আজকের এই আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।
comment url