OrdinaryITPostAd

গাড়িতে চড়লে বমি হওয়ার কারণ ও সমাধান

আমাদের মধ্যে ভ্রমন পিয়াসু অনেকেই রয়েছেন যারা যানবাহনে যেমন-বাস, প্রাইভেট কারে ভ্রমণ করলে বমির সমস্যায় পতিত হন। এমন পরিস্থিতির কারণে সুখকর যাত্রা তে কিছুটা হলেও বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এ জাতীয় সমস্যার উদ্ভবের কারণের মধ্যে মোশন সিকনেস অনেকাংশে দায়ী বলে বিবেচিত হয়। প্রিয় পাঠক আমরা আজকে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে গাড়িতে চললে কেন বমি হয়, বমি হওয়ার কারণ ও সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।
একটু মানসিক প্রশান্তির জন্য আমরা সকলেই কম-বেশি ঘুরতে যেতে পছন্দ করি। বছরে কোন না কোন অকেশনে আমরা কোথাও না কোথাও ভ্রমণ করে থাকি। তবে ভ্রমণের ক্ষেত্রে আপনার যাত্রাটি অবশ্যই সুখকর হওয়া উচিত। যানবাহনে চড়লে অনেকেরই বমির প্রবণতা দেখা দেয়, এমনকি মাথা ঘোরে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের বমির উদ্ভব হলে বমি করা ছাড়া আর কোন উপায়ান্তর থাকেনা। 

গাড়িতে বমি হওয়ার কারণঃ
গাড়িতে চললে বমি হওয়ার প্রধান কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গতি ও জড়তা। আর এই গতি ও জড়তার দরুন আমাদের মস্তিষ্কে একপ্রকার সমন্বয়হীনতার সৃষ্টি হয়, যার কারণে বমির উদ্ভব হয়। অনেক সময় দেখা যায়, চোখ ও অন্তঃকর্ণ এর ভারসাম্য সঠিক বজায় না থাকলেও বমি হতে পারে।অন্তঃকর্ণ আমাদের শরীরের গতি ও জড়তার ভারসাম্য রক্ষা করে থাকে। অন্তঃকর্ণ (internal ear/auris interna) হচ্ছে কানের গভীরতম অংশ যার মধ্যে শ্রবণযন্ত্র ও ভারসাম্যযন্ত্র থাকে। অন্তঃকর্ণের শ্রবণযন্ত্রের নাম হল কোন কর্ণকম্বু এবং ভারসাম্য যন্ত্রের নাম ভ্রমিকা সত্য। আমরা যখন গাড়িতে চড়ি তখন অন্তঃকর্ণ মস্তিষ্কে খবর পাঠায় যে সে গতিশীল। কিন্তু চোখতো বলে অন্য কথা। কারণ তার সামনের ও পাশের মানুষগুলো কিংবা গাড়ির সিটগুলো থাকে স্থির। চোখ আর অন্তঃকর্ণের এই সমন্বয়হীনতার দরুন উদ্ভব হয় মোশন সিকনেস। অনেক ক্ষেত্রে অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলেও বমি হতে পারে। রাস্তাঘাটের বা গাড়ির পচা দুর্গন্ধের কারণেও অনেক সময় আপনার বমি হতে পারে। 
গাড়িতে বমি বন্ধের কৌশল ও প্রতিকারঃ
আমাদের মধ্যে অনেকেই চলতি গাড়িতে হঠাৎ বমির উদ্ভব হলে কিছু টোটকা সমাধান করতে চাই, তারপরেও বমি বন্ধ না হলে পরবর্তীতে কোন উপায়ান্তর না পেয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই এবং যাত্রার পূর্বে অথবা যাত্রা পথে ঔষধ সেবন করি। নিম্নে গাড়িতে বমি বন্ধের কৌশল ও প্রতিকার সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় টিপস উল্লেখ করা হলো-
  • প্রথমত_আপনি কখনই খালি পেটে গাড়িতে উঠবেন না ও ভ্রমণ করবেন না। ভ্রমণের আগে হালকা কিছু খেয়ে গাড়িতে উঠুন। ভরা পেটে কখনোই গাড়িতে উঠবেন না। হালকা চিপস, ডালমুট খেতে পারেন, সাথে অল্প পরিমাণে পানি পান করতে পারেন। যাত্রাপথে বাইরের খাবার কিংবা অন্যের দেওয়া খাবার না খাওয়া, এসিডিটি হয় এ জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
  • গাড়িতে উঠলে বমি হবে এমন চিন্তা মাথায় মোটেও আনবেন না। নিজেকে শান্ত রাখুন, প্রয়োজনে লম্বা লম্বা নিঃশ্বাস নিন। প্রয়োজনে হেডফোনে ডিভাইসের মাধ্যমে গান শুনতে পারেন। 
  • ব্যক্তিগত গাড়িতে ভ্রমণ করলে বমির উদ্ভব হলে প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে মাঝে মধ্যে গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে একটু নিঃশ্বাস নিন দেখবেন বমির ভাব অনেকটাই চলে গেছে। যদি বাসে চড়েন এক্ষেত্রে মাঝে মধ্যে উঠে দাঁড়ান।
আরও পড়ুনঃ কোন মশা কামড়ালে ফাইলেরিয়া রোগ হয়  
  • চলন্ত গাড়িতে আপনি ইচ্ছা করলে বাবল গাম অথবা ঝাল/টক চকলেট খেতে পারেন। ফলে বমি-বমি ভাব অনেকটাই কেটে যাবে। 
  • বাস বা গাড়িতে সব সময় সামনের দিকে বসার অভ্যাস করুন। পেছনের দিকে বসলে গাড়ির গতি বেশী মনে হওয়া সহ বমির উদ্ভব হতে পারে।
  • গাড়ি বা বাসে উঠলে সব সময় জানালার পাশে বসার অভ্যাস করুন। এক্ষেত্রে জানালা খুলে রেখে বাইরের বাতাস ভিতরে আসতে দিন। জানালা দিয়ে বাহিরে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকুন। গাড়ির ভেতরে খুব বেশী তাকিয়ে থাকবেন না।
  • গাড়ি যেদিকে চলে তার উল্টোদিকে বসবেন না, এতে করে বমি ভাব তীব্র হয়।
  • অন্য যাত্রীর বমি করা দেখলে যদি বমি পায় তাহলে সেদিকে মনোযোগ দিবেন না।
  • হালকা ভাবে চোখ বন্ধ করে রাখুন। ভ্রমণের আগের রাতে ভালোভাবে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
  • গাড়ি চলন্ত অবস্থায় বই পড়া ও মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
  • বমি প্রতিরোধের জন্য আদা অথবা দারচিনি অনেক উপকারী যা খাবার হজমেও সহায়তা করে। তাই, চলন্ত গাড়িতে আপনি আদা কুচি/দারচিনি খেতে পারেন, বমি অনেকটা দূর হয়ে যাবে। 
  • টক জাতীয় কিছু খেলেও বমি ভাব দূর হয়। এছাড়া লেবু পাতার গন্ধ, কমলা লেবুর গন্ধেও বমি ভাব দূর হতে পারে। আপনি চাইলে গরম পানিতে লেবুর রস ও একটু লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন, মাথাব্যথা ও বমি ভাব দূর করতে এই পানি বেশ উপকারী। কিন্তু গ্যস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে বমি হলে লেবু না খাওয়াই ভালো।
  • চলন্ত গাড়িতে বমি ভাব হলে তৎক্ষণাৎ এক টুকরা লবঙ্গ দিন, বেশ উপকার পাবেন। এতে করে বমি ভাব চলে যাবে, সাথে সাথে মুখের দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
  • খুব দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করার পর একটু বিরতি নিতে পারেন। বিরতির সময় হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হন। দেখবেন অনেকটাই বমি ভাব থেকে রেহাই পেতে পারেন।
  • চলন্ত গাড়িতে বমি ভাব হলে আপনি নিজের সাথে চুইংগাম রাখতে পারেন। চুইংগাম চাবানোর কারণে আপনার মুখ ও মন ক্রমশই ব্যস্ত থাকবে এবং বমি ভাব হওয়া থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
  • যদি খুব বেশি সমস্যা হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বমি নিরোধক ঔষধ খেতে পারেন। 
প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত কয়েকটি প্রয়োজনীয় টিপস সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি চলন্ত গাড়িতে বমি হওয়া থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আজকের এই আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪